অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুখবর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, গণমঞ্চ নিউজ 

অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যেতে ইচ্ছুক বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুখবর দিয়েছে দেশটির সরকার। আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় কতজন বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য আসতে পারবেন সেটির একটি নির্দিষ্ট সীমা বেধে দিয়েছে দেশটি। নির্ধারিত আসন সংখ্যা ৯ শতাংশ বাড়িয়ে ২ লাখ ৯৫ হাজার করার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ঘোষণায় বলা হয়েছে, দেশটিতে পড়তে যেতে ইচ্ছুক বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আবেদনকারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

সোমবার (৪ আগস্ট) অস্ট্রেলিয়ার সরকারের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এর আগে, গত বছর অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও আবাসনের আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়ার সরকার। দেশটিতে চলতি বছর বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ২ লাখ ৭০ আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়।অস্ট্রেলিয়ার সরকার বলেছে, বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ার পর তা কমিয়ে আনার নীতি নেওয়া হয়। সরকারের এই নীতিতে ইতিবাচক ফল পাওয়ায় ২০২৬ সালে অতিরিক্ত ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দেশটির শিক্ষামন্ত্রী জেসন ক্লেয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষাখাত যাতে শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় স্বার্থের জন্য সহায়ক হয় সেই লক্ষ্যেই সরকার নতুন এই পদক্ষেপ নিয়েছে।কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে রেকর্ডসংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী দেশটিতে ফিরে আসায় ২০২৩ অর্থবছরে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থীকে ভিসা দেয় অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে পড়তে যাওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে চীনা ও ভারতীয়দের সংখ্যাই সর্বোচ্চ।বিদেশি শিক্ষার্থীদের লাগাম টানার অংশ হিসেবে গত বছর ভিসা ফি দ্বিগুণেরও বেশি করে অস্ট্রেলিয়া।

পাশাপাশি, যারা নিয়মের ফাঁকফোকর দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করে আসছেন, তাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

দেশটির আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়ান হিল বলেন, সরকার গত ১২ মাসে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সবার কাছে জনপ্রিয় না হলেও কার্যকর ফল মিলেছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল, এখন তা টেকসই পর্যায়ে এসেছে।দেশটির সরকার বলেছে, আগামী বছরের জন্য মোট বরাদ্দকৃত আসনের দুই-তৃতীয়াংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাবে। এ ছাড়া বাকি এক-তৃতীয়াংশ দেওয়া হবে ভোকেশনাল ট্রেনিং সেক্টরে।এক্ষেত্রে বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেশি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত আবাসনের ব্যবস্থা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে আরও বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীকে আকর্ষণ করতে পারলে তারা বাড়তি বরাদ্দ পাবে।চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমানোর কৌশল নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর অংশ হিসেবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টির সরকার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংগঠন ‘ইউনিভার্সিটিজ অস্ট্রেলিয়া’ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘যৌক্তিক’ উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছে।বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ বিদেশি শিক্ষার্থী নির্ভর দেশ অস্ট্রেলিয়া। ২০২৪ সালে দেশটির বিভিন্ন সেবা খাতের মধ্যে শীর্ষ রপ্তানি খাতের তকমা পেয়েছে আন্তর্জাতিক শিক্ষা। যা দেশটির অর্থনীতিতে ৫১ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) যোগ করেছে।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *