– ব্যরিষ্টার ওয়াহিদ মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান
জুলাই বিপ্লবের মধ্যদিয়ে পতিত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার ব্যতীত সকল রাজনৈতিক দলই যেন ক্ষমতা মজা লুটতে শুরু করেছে। একটি দল যেমন ক্ষমতায় বসেই পড়েছে এমন একটি ভাব, অন্য দল মনে হচ্ছে জনগণ এবার তাদেরকেই ক্ষমতায় বসাবে এমন ভাব সাব। আর অন্যান্য ছোট ছোট দলও কোনো অংশে কম না। দেশে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব, মাটি কাটা, বালু কাটা, মাদকের রমরমা ব্যবসা আর আওয়ামী পুনর্বাসনতো চলছেই প্রকাশ্যে-প্রকাশ্যে ও নীরবে নিভৃতে।
গত ১৬ বছর বা এর আগেও সকলেই বিশেষ করে দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারী সরকারের বিপক্ষে এক সাথে আন্দোলন সংগ্রাম করে সফলতার মুখ দেখার সাথে সাথেই তাদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিলো, এবং গালাগাল থেকে শুরু করে এক দল অন্য দলকে চ্যালেঞ্জ শুরু করে দিলো। এগুলো বলা আজকের উদ্দ্যেশ্য নয়। বরং আওয়ামীলীগ কিভাবে সুসংঘটিত হচ্ছে, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত শুরু করছে তা বলাই হচ্ছে মুখ্য।
কয়েকটি বিষয়ঃ
১. গোপালগঞ্জের মধ্যদিয়ে আওয়ামীলীগ রাজীনীতিতে ফিরছে, মাঠে নেমেছে প্রকাশ্যে যদিও এর আগে বিভিন্নভাবে মাঠে আসার চেষ্টা করেছে।
২. কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, টকশো ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক ও ব্যবসায়ীরা আওয়ামীলীগ ফিরিয়ে আনার জন্য ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বক্তব্য দেয়া শুরু করছে বিভিন্ন মিডিয়াতে।
৩. এরই মধ্যে অত্যান্ত গোপনে গত ২১ সে জুলাই ভারতে একটি “সর্বদলীয় সভা” হয়ে গেলো যেখানে স্বৈরাচারী হাসিনাকে “সসম্মানে ও পূর্ণনিরাপত্তায়” বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
৪. কিছু কিছু সুন্দরী সাংবাদিক হাসিনা (আমলের সুবিধাভোগী) প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমে বসে নতুন নতুন প্লাটফর্ম খুলে বা তাদের ইউটিউব চ্যানেলে বা তাদের ফাসেবুক পেজে হাসিনার গুনকীর্তন করছে আর ড মুহাম্মদ ইউনুস সরকারের কড়া সমালোচনায় লিপ্ত রয়েছে। তাঁরা তাদের এই আলোচনা বা টকশোতে স্বৈরাচারী সড়কের সাবেক এমপি, মন্ত্রী, অন্ধভক্তদের ডেকে তাদের বক্তব্য প্রচার করছে।
৫. দেশের মধ্যেও বিভিন্ন মিডিয়া ও রাজনৈতিক দল হাসিনা আমলের পেইড বুদ্ধিজীবী ও হিতকাঙ্খীদের আস্তে আস্তে নীরবে স্পেস দিয়ে তাদের বক্তব্য প্রচার করছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ তৈরী করছে।
৬. দেশে নাশকতার ছকসহ হাসিনা ও তাঁদের গং মরণ কামড় দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশে ও বিদেশে। আর আপনার ক্ষমতার স্বাদ এনজয় করছেন। কয়দিন সেই ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন? বা ক্ষমতায় টিকে থাকবেন? সেই সক্ষমতার এনালাইসিস করা খুব বেশি দরকার।
৭. আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগী আমলা, পুলিশ, ডিসি, এসপি, ইউএনও, থানার ওসি, এনএসআই, ডিজিএফআই থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তারা ড ইউনূসের সরকার এবং একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে জনগণের সামনে অজনপ্রিয় ও কলংকিত করার জন্য নীরবে কাজ করছে এবং তাদের উপর সরকারি দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করে বরং কিভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল ও প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় তা নিয়ে নিয়ে বেশি তৎপর। আর আপনারা রয়েছেন ঘুমে।
৮. উপদেষ্টা পরিষদেরও একটি অংশ দেশের চেয়ে নিজেদের পিঠ বাঁচানোর চেষ্টায় বেশি তৎপর যা পতিত আওয়ামী রেজিমকেই উৎসাহিত করছে পরোক্ষভাবে।
পরিশেষে, জুলাই বিপ্লবকে বাঁচাতে হলে, জুলাই সনদ ও ঘোণাপত্রের বিকল্প নেই, রাজনৈতিক দলের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই এবং আওয়ামীলীগের বিচার, এবং আওয়ামীলীগ যাতে কোনোরূপ স্পেস না পায় সে ব্যাপারে সকলের মধ্যে সীসা ঢালা প্রাচীরের মতো ঐক্য দরকার। অন্যথায়, ইতিহাসের কঠিনতম সময় অপেক্ষা করছে।