গাজার জন্য সহানুভূতির অভাব নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কঠোর সমালোচনা

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার গাজার মানবিক বিপর্যয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নির্লিপ্ততার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি একে “নৈতিক সংকট” বলে উল্লেখ করেন যা “বিশ্ব বিবেককে চ্যালেঞ্জ” জানায়।

তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল অ্যাসেম্বলিতে ভিডিও বার্তায় বলেন,

“আমি ব্যাখ্যা করতে পারছি না কেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এত বড় অংশ এতটা নির্লিপ্ত, সহানুভূতিহীন ও মানবতাবর্জিত আচরণ করছে।”

গুতেরেস বলেন, “এটি শুধুই মানবিক সংকট নয়, এটি একটি নৈতিক সংকট যা গোটা বিশ্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা প্রতিটি সুযোগে এই বিষয়ে সরব থাকব।”


ক্ষুধা ও সহিংসতার ভয়াবহতা

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় শিশুদের মধ্যে ক্ষুধা ও অপুষ্টির হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা
ইসরায়েল চলতি বছরের মার্চে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে গাজায় ত্রাণ অবরোধ জারি করে। মে মাসে সামান্যভাবে সেই অবরোধ শিথিল করা হয়।

এরপর থেকে GHF (Gaza Humanitarian Foundation), যা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত, সীমিত আকারে ত্রাণ বিতরণ শুরু করে। এই সংস্থাটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত পুরনো ত্রাণ ব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করে।

তবে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা GHF-এর সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, কারণ তারা মনে করে এটি ইসরায়েলি সামরিক উদ্দেশ্যকে সহায়তা করছে।


আইসিআরসি-র (ICRC) প্রধানের বক্তব্য

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির সভাপতি মিরজানা স্পলজারিক বলেন,

“গাজায় যা ঘটছে, তার কোনো অজুহাত নেই। মানবিক কষ্টের মাত্রা ও মর্যাদা হরণ আইনি ও নৈতিক উভয় সীমা অতিক্রম করেছে।”

তিনি জানান, ICRC-র ৩৫০ জনের বেশি কর্মী গাজায় কাজ করছে, যাদের অনেকে নিজেরাও খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছেন


গুতেরেসের আর্তি: যুদ্ধবিরতি ও সহায়তা নিশ্চিত করুন

গুতেরেস আরও বলেন,

“আমি হামাসের ৭ অক্টোবর ২০২৩-এর অভিযানের নিন্দা করেছি। কিন্তু যে ভয়াবহ মৃত্যু ও ধ্বংস এর পর থেকে ঘটেছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি বলেন, “শিশুরা এখন জান্নাতে যেতে চায়, কারণ তারা বিশ্বাস করে, সেখানেই অন্তত খাবার আছে।

গুতেরেস জানান, ২৭ মে থেকে GHF কার্যক্রম শুরু করার পর খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে ১,০০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন

তিনি আহ্বান জানান,

আমরা এখনই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সকল জিম্মির মুক্তি এবং পূর্ণাঙ্গ মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার চাই।

“যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে, জাতিসংঘ মানবিক সহায়তা বহুগুণে বাড়াতে প্রস্তুত,”— বলেন মহাসচিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *