জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে লাখো জনতার উপস্থিতি, চলছে মূল পর্ব

গণমঞ্চ ডেষ্ক-

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার দুপুর দুইটার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ‘জাতীয় সমাবেশের’ মূল পর্ব শুরু হয়েছে। এতে লাখো নেতা-কর্মী যোগ দিয়েছেন।

শুরুতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও দুরুদ এর মধ্যে দিয়ে মূল পর্বের কার্যক্রম উদ্ভোধন করেন। সমাবেশে নাতে রাসুল পরিবেশন করেন সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। এরপর সমাবেশে উপস্থিত জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় প্রারম্ভিক বক্তব্য। দলটির আমির ড. শফিকুর রহমান সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন। সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য দেবেন।

সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিপুল উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে দলে দলে সমাবেশে যোগ দেন দলটির নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই ঢাকায় গণপরিবহন চলাচল সীমিত রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দলটির নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। এতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। শাহবাগে গাড়ী চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, রিকশা ও অ্যাম্বুলেন্স চলছে।

সরেজমিনে দেখা যায় সমাবেশের আশপাশের এলাকায় লোকজনের পচন্ড ভীর। কারও কারও পরনে জামায়াতের লোগো সংবলিত টি-শার্ট। কারও কারও মাথায় বাঁধা দলীয় সাদা ফিতা। আবার কেউ কেউ এনেছেন দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। কারো হাতে জাতীয় পতাকা। মিছিল নিয়ে দলীয় স্লোগানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সমাবেশস্থলের দিকে যাচ্ছেন অনেকে। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি রাস্তার মোড়ে মোড়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবকেরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন সড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

জামায়াতের জাতীয় সমাবেশের মূল মঞ্চ করা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব পাশে। ভিড়ের কারণে সমাবেশের মূল মাঠে প্রবেশ করতে না পেরে অনেকেই শাহবাগ মোড়, রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন সড়কে বসে পড়েন। শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসানো ডিজিটাল পর্দায় সমাবেশ দেখছেন তারা।

জামায়াতে ইসলামী দপ্তর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছে, সমাবেশে তারা বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাঁরাও বক্তব্য দেবেন।

দলটির কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী জাতীয় নির্বাচন ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের পাশাপাশি গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, ছাত্রলীগ, যুবলীগের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও এই সমাবেশ হওয়া একটি ইতিবাচক দিক।

জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ আরও জানিয়েছে, এই সমাবেশে তাদের মূল দাবি হল অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রভৃতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *