ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস স্থাপনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে রোববার রাজার ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের ঢাকা শহরে জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস স্থাপনের সম্ভাব্য পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন।

বিক্ষোভকারীরা চারটি প্রধান আপত্তির কথা জানান:
১. জাতীয় সার্বভৌমত্বের সম্ভাব্য হুমকি,
২. বাংলাদেশের মৌলিক সামাজিক ও ধর্মীয় নীতিতে হস্তক্ষেপ,
৩. আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা,
৪. মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির জন্য চাপ তৈরির সম্ভাবনা

বিক্ষোভ চলাকালে এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনৈতিক স্বাধিকার দুর্বল করবে।

তারা দাবি করেন, এই অফিস পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে পারে, যা অঞ্চলটিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই অফিস দক্ষিণ এশিয়ার সীমান্ত পুনর্গঠনের ষড়যন্ত্রে সহায়তা করতে পারে, যার লক্ষ্য একটি “সিয়নবাদী-খ্রিস্টান রাষ্ট্র” গঠন করা।

তারা বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস সমকামী (LGBTQ) ব্যক্তি ও যৌনকর্মীদের অধিকার ও স্বীকৃতির পক্ষে কাজ করে—যা বাংলাদেশের ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক মূল্যবোধ এবং প্রচলিত আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তাদের আশঙ্কা, এই অফিস শিক্ষাব্যবস্থায়—স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও—এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারকে চাপ দেবে।

তারা আরও দাবি করেন, যেসব দেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস রয়েছে, সেসব দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে বলে তারা মনে করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “জাতিসংঘ সাধারণত যুদ্ধবিধ্বস্ত বা চরম অস্থিতিশীল দেশগুলোতে মানবাধিকার অফিস স্থাপন করে। কিন্তু বাংলাদেশ এমন পরিস্থিতিতে নেই।”

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এই অফিস ধর্ষণ ও হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের জন্য বাংলাদেশে প্রচলিত মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত করতে সরকারকে প্রভাবিত করবে—যা অপরাধীদের সাহস জোগাবে এবং ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।

তাদের মতে, জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস পরিচালিত হলে বিশেষ করে শিক্ষাখাতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।

“এই কারণেই আমরা রাজপথে নেমেছি,” তারা বলেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস স্থাপন সংক্রান্ত যেকোনো চুক্তি বা আলোচনা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *