চলতি মাসের শুরুতেই ১৮ বছরে পা দেওয়া ইয়ামাল বার্সেলোনার হয়ে সিনিয়র ফুটবল ক্যারিয়ারে পেয়েছেন দুর্দান্ত সূচনা। ইতিমধ্যে তিনি ১০৬টি ম্যাচ খেলে ২৫টি গোল ও ২৮টি অ্যাসিস্ট করেছেন। স্পেনের ইউরো ২০২৪ জয়ে বড় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি গত মৌসুমে বার্সেলোনাকে ঘরোয়া ট্রেবল জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সম্প্রতি বার্সেলোনা তাকে ক্লাবের সাবেক তারকা মেসির পরিহিত বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সি নম্বর দিয়েছে। ফলে দুজনের তুলনা বেড়ে যাচ্ছে আরও।
পেশাদার ক্যারিয়ারে শীর্ষ পর্যায়ে খুব অল্প সময়েই প্রতিভার জানান দিয়ে চলে এসেছেন আলোচনায়। অনেকের কাছেই তিনি এই সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার। তবে অন্যদের চেয়ে লামিন ইয়ামালের বিষয়টি একটু আলাদা। কারণ, শুরু থেকেই যে তার সাথে তুলনা চলে আসছে বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি লিওনলে মেসির। তবে এটা ভালো লাগছে না পেপ গার্দিওলার। ম্যানচেস্টার সিটি কোচ মনে করেন, মেসির উচ্চতার কাছাকাছি যেতে হলেও ইয়ামালের প্রমাণ করার বাকি আছে আরও অনেক কিছুই।
স্পেন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গার্দিওলা বলেছেন, ইয়ামালের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দেওয়াটাই শ্রেয়। “তাকে ক্যারিয়ারটা এগিয়ে নিতে দিন। মেসির সঙ্গে যে কারোরই তুলনা করাটা নিঃসন্দেহে বড় ব্যাপার। যেমন, কোনো চিত্রশিল্পীকে যদি ভ্যান গগের সঙ্গে তুলনা করা হয়, তখন সবাই বলবে, ‘বাহ, ভালো তো!’ মানে সে নিশ্চয়ই ভালো কিছু করছে। কিন্তু আমাদের তো তাকে সময় দিতে হবে। সময়ের সাথে সাথে সে কীভাবে খেলোয়াড় হিসেবে বেড়ে ওঠে, সেটা একটা দেখার বিষয় হবে।”
রেকর্ড ৮ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসিও তার পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন বার্সেলোনায়। ২০২১ সালে পিএসজিতে যোগ দেওয়ার আগে কাতালান ক্লাবটির হয়ে গড়েন অজস্র রেকর্ড, হয়ে ওঠেন নিজের সময় তো বটেই, ইতিহাসের সেরাদের একজনও। ইয়ামাল গত মৌসুমে পার করেন সেরা সময়। ৫৫ ম্যাচে ১৮টি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করান ২৫টি গোল।
মেসি ছিল ব্যতিক্রমী এক ফুটবলার। এক মৌসুমে ৯০ গোল করা, টানা ১৫ বছর ধরে শীর্ষ পর্যায়ে পারফর্ম করা, তাও বড় কোনো চোট ছাড়াই… এটা কোনো সাধারণ কথা না কিন্তু। তাই আমি বলব তাকে (ইয়ামালকে) এগিয়ে যেতে দিন, উন্নতি করতে সময় দিন।”
গার্দিওলা যে ৯০ গোলের কথা বলেছেন, সেটা ছিল ২০১২ সালে। মেসি সেবার এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে ৯১ গোল করে জার্ড মুলারের ১৯৭২ সালে করা ৮৫ গোলের রেকর্ড ভেঙে দেন, যা আজও রয়ে গেছে অক্ষত।
সাক্ষাৎকারে যখন বার্সেলোনায় ফিরতে চান কি না—জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন গার্দিওলা স্পষ্ট জানিয়ে দেন ওই অধ্যায় শেষ। খুব সুন্দর একটা সময় কেটেছে, কিন্তু সেটা এখন অতীত।