রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে ৩০ হাজার সৈন্য পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করতে আরো সৈন্য পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। একটি গোপন ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করতে উত্তর কোরিয়া অতিরিক্ত ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার সেনা পাঠাতে যাচ্ছে। এর ফলে রাশিয়ার পক্ষে লড়াইরত উত্তর কোরীয় সেনার সংখ্যা প্রায় তিনগুণ হতে পারে। খবর সিএনএন’র।

২০২৪ সালের নভেম্বরেই প্রায় ১১ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছিল, যারা ইউক্রেনের কুরস্ক অঞ্চলে রুশ সীমান্তে হামলা ঠেকাতে সহায়তা করেছিল। ইউক্রেনীয় ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানায়, এদের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার হতাহত হন। তবুও মস্কো-পিয়ংইয়ং সম্পর্ক এর পর থেকেই আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে।

সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় উত্তর কোরীয় সেনাদের জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম যোগানোর পাশাপাশি তাদের রুশ ইউনিটে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফ্রন্টলাইনের ইউক্রেন অধিকৃত এলাকাগুলোতে বড় ধরনের আক্রমণে তাদের যুক্ত করা হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

স্যাটেলাইট ছবি ও উন্মুক্ত উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সিএনএন বলছে, গত বছরের মতোই আবারো সেনা পরিবহনকারী রুশ জাহাজ ও উত্তর কোরিয়ার সুনান বিমানবন্দরে কার্গো বিমানের গতিবিধি বেড়েছে। মে মাসে দুনাই বন্দরে একটি রোপুচা-ক্লাস জাহাজ ভিড়েছে, যা ৪০০ সেনা বহনে সক্ষম। একই ধরণের জাহাজ গত বছরও ব্যবহৃত হয়েছিল। জুনে সুনান বিমানবন্দরে আইএল-৭৬ কার্গো বিমান দেখা গেছে, যেগুলোও অতীতে সেনা পরিবহনে ব্যবহৃত হয়েছিল।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে তার উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শইগু গত ১৭ জুন পিয়ংইয়ং সফর করেন। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন, উত্তর কোরিয়া ১ হাজার মাইন নিষ্কাশনকারী ও ৫ হাজার সামরিক নির্মাণ শ্রমিক রাশিয়ায় পাঠাবে। যারা কুরস্ক অঞ্চলের ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে সহায়তা করবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া এরই মধ্যে সেনা নির্বাচনের কাজ শুরু করেছে, জুলাই বা আগস্টে তাদের পাঠানো হতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধে প্রথম থেকেই রাশিয়াতে সহায়তা করে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২৪ সালেই পিয়ংইয়ং মস্কোকে অন্তত ১০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০ লাখ গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে বলে জাতিসংঘের ১১টি দেশের একটি যৌথ প্রতিবেদন জানিয়েছে। এছাড়া, রুশ ভাষায় অনূদিত উত্তর কোরীয় আর্টিলারি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালও উদ্ধার করেছে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দারা।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *