সিলেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণ,আটক ২

প্রায়ই ফাঁদে ফেলে লুট করে নেয় কুচক্রী শয়তানেরা। আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে রাখা হয় প্রতিনিয়ত। এসব ফাঁদে পড়ে কারো কারো হারাতে হয় প্রাণ, ধন-রত্ন কিংবা সম্মান। সব কিছু হারালে জোর গলায় বলতে পারি, তবে সম্মান হারালে আমরা তা চেপে রাখতে চাই। বিভিন্ন ফাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ফাঁদ হচ্ছে ধর্ষণের ফাঁদ।

সম্প্রতি এমনই একটি ফাঁদে পা দিয়েছিলেন শাবিপ্রবির এক ছাত্রী। কোতোয়ালি থানায় দুইজনের নামে মামলা করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী।
মামলা, ভুক্তভোগী ও অন্য শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে রিকাবীবাজারে একটি কনসার্টে যাওয়ার আগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ফাঁদে ফেলে অচেতন করে সুরমা আবাসিক এলাকার একটি মেসে নিয়ে যান শান্ত ও স্বাগত। পরে রাতভর তাকে নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করেন। অভিযুক্তরা হলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাস পার্থ। ১৯ জুন বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে একজনকে ক্যাম্পাস থেকে এবং অন্যজনকে সুরমা আবাসিক এলাকা থেকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে শান্ত তারা আদনান নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় মামলার আসামি। এছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি, ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ইসমাঈল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে বৃহস্পতিবার অভিযোগ পাই। অভিযোগ পাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে হাজির করা হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
তাঁদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে শুরু হয়ে সামাজিক অনুষদ চত্বর ঘুরে ফের গোল চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দোষী দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সহপাঠীর সঙ্গে এ রকম ঘটনা যারা ঘটাতে পারে তারা আর যাই হোক মানুষ হতে পারে না। তাদের এই ক্যাম্পাসে থাকার কোনো অধিকার নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি—অবিলম্বে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

এর আগে বাদ জুমা সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে। পরে বিকেলে ভয়েস ফর জাস্টিস নামের আরেকটি সংগঠন একই দাবিতে মানববন্ধন করে।
ওসি মো. জিয়াউল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *