স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আর দলীয় প্রতীক ব্যবহৃত হবে না—এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে এক পোস্টে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এর আগে, গত ১ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে চারটি খসড়া অধ্যাদেশ প্রস্তুত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেয়।
উপদেষ্টা পরিষদ এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর অধ্যাদেশগুলো গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই চারটি খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদন করে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এখন থেকে কোনো রাজনৈতিক দল প্রার্থীকে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দিতে পারবে না। সব প্রার্থীকে নির্দলীয় বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের বিধান চালু হয়।
তবে এরপর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নির্বাচনী বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্ট মহল থেকে বারবার এই দলীয় প্রতীক বাতিলের দাবি ওঠে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন—দুটিই দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়ার সুপারিশ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দলীয় প্রতীক বাদ দিলে রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকা যোগ্য ব্যক্তিরাও নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হবেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে।
যেখানে বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন না করার দাবি জানিয়ে এসেছে, সেখানে জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতো দলগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, স্থানীয় সরকারের চারটি গুরুত্বপূর্ণ আইনে সংশোধন এনে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের বিধান বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।