আজ বুধবার (১৬ জুলাই), রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে আয়োজিত এক আবেগঘন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আলোচিত, সমালোচিত ও নির্বাসিত সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসেন এর নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে গনমাধ্যম “বাংলা এডিশন”
জুলাই অভ্যূত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি অনাড়ম্ভরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলো বাংলা এডিশন।
‘বাংলা এডিশন’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আল-আমিন বলেন, “গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জনগণের অধিকার-এই তিন মূল ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে বাংলা এডিশন গড়ে উঠেছে।“ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে একযোগে বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলেও জানান মো. আল-আমিন।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ও কনক সারওয়ার এবং ফ্রান্স থেকে পিনাকী ভট্টাচার্য। তারা বলেন, “বাংলা এডিশন সবসময় দেশের স্বার্থে, জনগণের ভাষায় কথা বলবে। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকে সাহসের সঙ্গে কাজ করবে এই নতুন গণমাধ্যম।”
সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস. মুরশিদ বলেন, “বাংলা এডিশনের যাত্রা হোক হলুদ সাংবাদিকতা বন্ধের সূচনা। আমরা এই সংবাদমাধ্যমের যাত্রাতে অনেক কিছু আশা করছি ।”
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “ইলিয়াস হোসাইন একটি সাহসী চেতনার নাম। তার নেতৃত্বে ‘বাংলা এডিশন’ এক নতুন দিনের, নতুন বাংলাদেশের সাহসী গণমাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।”
অনুষ্ঠানে শহীদ মীর মুগ্ধ এবং শহীদ আবু সাঈদ-এর উপর নির্মিত দুটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে আর্থিক সম্মাননাও প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদ আশরাফুলের মা মঞ্চে উঠে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
শহীদ পরিবারের সদস্যরা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “আমাদের সন্তানদের হত্যার বিচার আজও হয়নি। বহু খুনি এখনও ক্ষমতার ভিতরে ঘাপটি মেরে আছে। এক বছর পার হলেও এখনো একটি মামলারও বিচার হয়নি, এমনকি কোনো মামলায় চার্জশিটও দেওয়া হয়নি। তারা আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ফল ভোগ করছে অনেকে, অথচ আমরা সন্তান হারানোর কষ্টে বিচারের আশায় আজও অপেক্ষায় রয়েছি। এই অবিচার আমাদের প্রতিনিয়ত হতাশ করে তুলছে।”
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র চিন্তক ফরহাদ মজহার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজ বীর প্রতীক, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, এনটিভির চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু, আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের, কর্নেল হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল আমান আজমী, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এহসান মাহবুব জুবায়ের, দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, মুফতি হারুন ইজহার, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী, ইসলামী বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী, শহিদ মীর মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, শহীদ নাহিদের মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।”