দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, মুরগি ও সবজির, কমেছে ডিম, মরিচের

বাজারে দীর্ঘদিন পর ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দাম। বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বাড়লেও কমেছে ডিমের দাম।

গত সপ্তাহ থেকে চড়া দামে বিক্রি হওয়া মরিচের দাম অল্প কমেছে।আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মানভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। এতে করে ঢাকার দোকানগুলোতে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আগে পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে।

খুচরা বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, কয়েক মাস ধরেই পেঁয়াজের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল। হঠাৎ করেই দুই-তিনদিন ধরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত কোরবানি ঈদেও পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল ছিল।রামপুরা বাজারের দোকানি আনিসুল হক বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

দু’দিন ধরে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। এজন্য আমাদের ৬৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম এখন ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা, যা আগে ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা।বাজারে ডিমের দাম কমলেও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বাজারভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়।

হাতিরপুল কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা লুতফুল হক বলেন, সরবরাহ কিছুটা থাকায় দাম বেড়েছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও কমেছে ডিমের দাম। ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম গত সপ্তাহে বাড়লেও তা আবার কমতে শুরু করেছে এবং প্রতিডজন ডিমের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এখন প্রতিডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়।

অন্যদিকে, আমদানির প্রভাবে দাম কিছুটা কমলেও এখনো উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ৩০০ টাকায় উঠেছিল।কারওয়ানবাজারের সবজি বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, বৃষ্টি হলে কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পায়। গেল কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টির প্রভাবে সবজির সরবরাহ পরিস্থিতি বেশ কিছুদিন ধরে হেরফের হচ্ছে। যে কারণে বেশির ভাগ সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, ধন্দুল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিকেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, জালি ৫০, লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ মানভেদে প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রামপুরা বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাজেদুর রহমান। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম অতিরিক্ত। কিছুদিন আগে হঠাৎ সবজির দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে আর দাম কমছে না।

সবজির দাম বাড়তির বিষয়ে মহাখালীর সবজি বিক্রেতা আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে। বেশ কিছু সবজির ইতোমধ্যে মৌসুম শেষ হয়েছে- এ কারণে বাজারের সরবরাহ কম। এছাড়াও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবজি ঢাকায় তুলনামূলক কম আসছে। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজির দাম বাড়তি।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *